ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়ায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্রমাগত গোলাবর্ষণের কারণে এ অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ তেজস্ট্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, সেখানে রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জামের উপস্থিতি কেন্দ্রটির নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ কেন্দ্রটি পরিদর্শন করার পর প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে জাপোরিঝিয়ায় গোলাবর্ষণ থামানো এবং সেখানে একটি নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অঞ্চল তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি এই প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সামরিক সরঞ্জামের উপস্থিতি সেখানে আমাদের কর্মীদের জন্য একটি চাপ।’ জেলেনস্কি বলেন, ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অঞ্চল’ বেসামরিকীকরণ হলে তিনি নিরাপত্তা জোন তৈরির বিষয়টি সমর্থন করবেন।

ইউক্রেনে আগ্রাসনের শুরুর দিকেই জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের দখল নেয় রাশিয়া। ইউরোপের বৃহত্তম এ কেন্দ্রটি ডিনিপার নদীর দক্ষিণ তীরে ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত শহর এবং সামরিক অবস্থানের কাছেই। উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে কেন্দ্রটিকে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ তুলেছে। গত মঙ্গলবার রাশিয়া কিয়েভের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিন দফায় ওই এলাকায় হামলার অভিযোগ এনেছে। অন্যদিকে ইউক্রেন বলেছে, আশপাশের শহরগুলোতে গুলি চালানোর জন্য রুশ বাহিনী কেন্দ্রটিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।

তবে রাশিয়ার দাবি, তারা কেন্দ্রটি পাহারা দিচ্ছে। এ দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন বলেছেন, পশ্চিমারা তাদের মত বিশ্বের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র এখন এশিয়া। পশ্চিমা অর্থনীতির ব্যর্থতা এবং তাদের আগ্রাসী চেষ্টা এশিয়ার ক্রমবর্ধমান দেশগুলোর ভবিষ্যৎ হিসেবে সামনে হাজির করার চেষ্টা চলছে। বুধবার রাশিয়ার ভদ্মাদিভস্তকে ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। পুতিন বলেন, পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক ‘আগ্রাসন’ মোকাবিলা করছে রাশিয়া। তাদের নিষেধাজ্ঞার জন্য ইউরোপীয়দের জীবনযাত্রার মান কমেছে।